।।গোলাম মোস্তফা রাঙ্গা।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলাধীন নুনখাওয়া ইউনিয়নের বাহুবল মন্ডলের ভিটা গ্রামের মোঃ হযরত আলী ও মোছাঃ মমেনা বেগম-এর ছোট ছেলে মোহাম্মদ আলী। মা, বাবা, ২ ভাই ও ৩ বোনকে নিয়ে মোহাম্মদ আলীদের সংসার। তার বাবা একজন সাধারণ কৃষক। ২০০৭ সালে নাগেশ্বরী ডিগ্রি কলেজ হতে এইচএসসি পাশ করে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার জন্য তিনি নুনখাওয়া ইউনিয়নের ভিডিপি দলনেতা হওয়ার লক্ষ্যে ২০১৪ সালে ২৭ অক্টোবর মাসে গাইবান্ধা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আয়োজিত ১৪দিন মেয়াদী মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন মোহাম্মদ আলী। ২০১৫ সালে ১ মার্চ ইউনিয়ন ভিডিপি দলনেতা হিসেবে যোগদান করে আনসার বাহিনীর ব্যানারে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ শুরু করেন। এরপর থেকে মোহাম্মদ আলী প্রত্যেক পূঁজা ও নির্বাচনে দেশে জন্য আইন-শৃংখলা রক্ষার কাজে দায়িত্ব পালন করছেন। গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোহাম্মদ আলী নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নির্বাচন কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকালে নিজের সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বিরোধীদলের রোষানল থেকে কয়েকজন কর্মকর্তার জীবন রক্ষা করেন। এছাড়াও সেই সময় দেশে চলমান সড়ক ও রেল পথে পেট্ট্রোল বোমা নিক্ষেপসহ নানানধরনের নাশকতার বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ভূমিকা পালন করেন। সেই লক্ষ্যে তিনি নাগেশ্বরী টু ঢাকা মহাসড়কে কুমরপুর হতে পাটেশ্বরী পর্যন্ত সড়কের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি যুব উন্নয়নের অধীনে ন্যাশনাল সার্ভিসের উপর ৩ মাসের প্রশিক্ষণ সম্পূন্ন করেন। একই প্রতিষ্ঠান হতে ১৫দিন মেয়াদী মৎস্য প্রশিক্ষণ কোর্সও সম্পূর্ণ করেন।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে মোহাম্মদ আলীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় তার এলাকার প্রায় ১৫০০ জন লোক দীর্ঘ ২০ বছর পর বিদ্যুতের সংযোগ পান এবং আলোর মুখ দেখেন। এলাকার দুস্থ মহিলাদের ভিজিডি কার্ড, রেশন কার্ড, ভিজিএফ কার্ড পেতে প্রত্যেক্ষ সহযোগীতা প্রদান করেছেন। তার এলাকার যে কারো বিপদে সবার আগে মোহাম্মদ আলীর হাজির, সব সময় টাকা পয়সা না দিতে পারলেও পরামর্শ ও শ্রম দ্বারা সে মানুষের উপকার করতে সদা প্রস্ত্তত থাকেন। এতে করে এলাকায় মোহাম্মদ আলীর যথেষ্ট গ্রহণ যোগ্যতা তৈরি হয়েছে। নিজ এলাকায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি ঔষধি গাছ লাগিয়ে দেন। এলাকার কেউ অসুস্থ হলেই তিনি তাদেরকে হাসপাতালে আনা নেওয়াসহ নিয়মিত রোগীর খোজ খবর নেন।
২০১৫ সালের ২ মে তারিখ ভিডিপি দলনেতা মোহাম্মদ আলী নুনখাওয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীকে অপহরণকারী হাত থেকে উদ্ধার করেন এবং অপহরণকারীকে তিনি ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করেন। আদালত উক্ত অপহরণকারীকে ১মাসে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। উক্ত প্রশংসনীয় কাজের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক ইউনিয়ন ভিডিপি দলনেতা মোহাম্মদ আলীকে প্রশংসাপত্র প্রদান করেন।
আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল মোহাম্মদ আলী জীবিকার তাগিদে যুব উন্নয়ন হতে স্বল্পসুদে ঋণ গ্রহণ করে নিজ বাড়ীতে গবাদি পশু পালনের মাধ্যমে এবং পুকুর লিজের মাধ্যমে মৎস্য চাষ করে আর্থিক স্বাবলম্বী হওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত মোহাম্মদ আলীর জমজ কন্যা সমত্মানসহ তিন মেয়ে। বড় মেয়ে ৮ম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত এবং জমজ সন্তানদের বয়স প্রায় ১বছর। জমজ মেয়েদের মধ্যে এক মেয়ে জন্মের পর থেকেই কিডনি ও শ্বাস কষ্ট রোগে ভুগছেন। উক্ত সন্তানের এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে করতে তিনি এখন নিঃস্বপ্রায়। তথাপিও থেমে যাইনি মোহাম্মদ আলীর সেবামূলক কাজের স্প্রীহা।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস